সম্প্রতি, একটি সাংবাদিক বৈঠকে জাপানের একটি বৈজ্ঞানিক দল স্পেস স্টেশনে ‘গ্লাস’ হ্যাবিটেট পরিকাঠামো বানানোর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।

এই  ‘গ্লাস’ হ্যাবিটেট পরিকাঠামোটি কাচের তৈরি এবং এটি  হুবহু আমাদের পৃথিবীর মতোই হবে। পৃথিবীর মতোই মাধ্যাকর্ষণ, ভূ-খণ্ড এবং বায়ুমণ্ডল বানানো হবে এতে। 

পৃথিবীর জলবায়ু বা শারীরিক ও বায়বীয় পরিকাঠামোতে মানুষের শরীর যে ভাবে বহু বছরের বিবর্তনের মাধ্যমে মানিয়ে নিয়েছে, খোলা মহাকাশে সেই পরিকাঠামো নানান ভাবে বিগড়ে যেতে পারে। 

তাই, পৃথিবীর বাইরে বেরিয়ে মাধ্যাকর্ষণ শূন্য স্থানে মানুষের দেহের মাস্কুলোস্কেলিটাল সিস্টেম দুর্বল না-হয়ে যায়, তার জন্যই কাচের ওই পরিকাঠামো বানানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

বিশেষ করে মহাকাশে শিশুদের বড় করে তোলা এবং সফল ভাবে একটা শিশুর জন্ম হওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে এই কাচের ঘর মানুষকে পৃথিবীর মতোই শারীরিক ও বায়বীয় পরিকাঠামো দেবে।

এই মর্মে, জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় এবং কাজিমা কনস্ট্রাকশনের আগামী লক্ষ্য হবে মহাকাশে কৃত্রিম মাধ্যাকর্ষণ-সহ একদম হুবহু পৃথিবীর একটি প্রতিরূপ গড়ে তোলা।

তাঁরা জানাচ্ছেন যে, মোটামুটি ১,৩০০ ফুট লম্বা এবং ৩২৮ ফুট ব্যাসার্ধের একটি মাধ্যাকর্ষণ বলয় তৈরি করবেন তাঁরা।সে ক্ষেত্রে চাঁদে থাকা বাসস্থানকে ‘লুনাগ্লাস’ এবং মঙ্গলের বাসস্থানকে ‘মার্সগ্লাস’ বলা হবে।

আগামী পাঁচ দশকে সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি নতুন শাখাও প্রতিস্থাপন করা হবে, যাতে মহাকাশের বিবর্তনগত পরিবেশে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। 

এবং পৃথিবীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য রকেট বুস্টার শট দ্বারা পরিচালিত ট্রেইলিং কারের ব্যবস্থাও থাকছে। প্রতিটি গ্রহের মহাকর্ষীয় টান থেকে বাঁচার উপায়ও থাকবে।

জাপানের বিজ্ঞানীরা এক গ্রহ থেকে আর এক গ্রহে যাওয়ার জন্যও একটি ট্রাক নির্মাণের পরিকল্পনা করেছেন, ট্র্যাকটির নাম দেওয়া হয়েছে হেক্সাট্র্যাক (Hexatrack)।

এই ট্র্যাকগুলির উপর দিয়ে চলাচলের জন্য হেক্সাক্যাপসুল নামক ষড়ভুজের আকৃতি বিশিষ্ট এক বিশেষ প্রকারের চলমান বা গতিশীল ডিভাইস নির্মাণের কথাও বলেছেন তারা।

তারা আরও জানিয়েছেন পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে যাতায়াতের জন্য ১৫ মিটার   ব্যাসার্ধ   যুক্ত ছোট ছোট মিনি ক্যাপসুল থাকবে।

এবং পৃথিবী ও মঙ্গল এবং চাঁদ ও মঙ্গলের মধ্যে যাতায়াতের জন্য ৩০ মিটার ব্যাসার্ধের আরও বড় ক্যাপসুল নির্মাণ করা হবে এগুলির স্ট্রাকচার এমন হবে যাতে এর বাইরের ফ্রেমটা ভাসমান থাকে।

এই ট্র্যাক নির্মাণে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হবে যা  চিন এবং জার্মানির মাগলেভ ট্রেনে ব্যবহৃত হয়। এই ট্রাকের উপর চলমান ছয় কোচ বিশিষ্ট ট্রেনটির নাম হবে স্পেস এক্সপ্রেস।