১১৫ ফুট লম্বা এক দীর্ঘ কমলা রঙের মানবমূর্তি। আর তার দেহের লম্বচ্ছেদের অর্ধেক অংশ ঢুকে রয়েছে স্বচ্ছ কাচের তৈরি এগারো তলার একটি বিশাল বাড়ির মধ্যে।
নেদারল্যান্ডসের লেইডেন শহরের রাস্তা দিয়ে যেতে গেলে মানুষের চোখে পড়তে বাধ্য এই স্থাপত্য। কিন্তু এই বিশাল মানব-মূর্তি কোনো সাধারণ স্ট্যাচু নয়। এটি আসল একটি আস্ত যাদুঘর।
এটি হল পৃথিবীর প্রথম সংগ্রহশালা, যা উপস্থাপন করে গোটা মানবদেহের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াকেই। এর নাম কর্পাস যাদুঘর, ২০০৮ সালে নির্মিত হয়েছিল লেইডেনের এই বিস্ময় সংগ্রহশালা।
বাস্তবে পুরো যাদুঘরটিই একটি মানবদেহ। অবিকল মানবদেহের কায়দায় শুধু দৈহিক তন্ত্রের গঠন নয়, বরং শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলিকেও দেখানো হয়েছে সেখানে যন্ত্রের মাধ্যমে।
দৈহিক কার্যকলাপের পুরো হদিশ পেতে গেলে পা থেকে শুরু করে মাথা পর্যন্ত ঘুরে দেখতে হবে। মানব অবয়বটির পায়ের গোড়ালি থেকে শুরু করে হাঁটু পর্যন্ত প্রথমে পৌঁছতে হবে এসক্যালেটরে।
সেখানে একটি ক্ষতের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করতে হবে দর্শকদের। তারপর হেঁটে পৌঁছতে হবে কোমর পর্যন্ত। সেখানে পুরুষ এবং মহিলা উভয় জননতন্ত্রেরই সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে।
3D চশমায় ডিম্বাণু নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়াকেও চাক্ষুষ করা যাবে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে থাকলে কিডনি, পৌষ্টিকতন্ত্র, ফুসফুস, হৃদপিণ্ড সবকিছুই দেখা যাবে।
মুখগহ্বরে রয়েছে শিশুদের জন্য ছোট্ট একটি ‘পার্ক’। জিভের ওপরে লাফালেই স্পিকারে বেজে উঠবে আর্তনাদ। স্ক্রিনে দেখা যাবে বিভিন্ন স্বাদ কোরকের নাম।
প্রাপ্তবয়স্ক মস্তিকে নিউরোনের স্পন্দন, বার্তাবহনের প্রক্রিয়া, দেওয়ালে স্বচ্ছ কাচের তৈরি শিরা, ধমনীর মধ্যে দিয়ে রক্তের প্রবাহ, বিভিন্ন রক্তকণার উপস্থিতিও একেবারেই নজরকাড়া।