খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দী থেকে অষ্টম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে মিশরীয় নগরী হেরাক্লিয়ন ছিল ভূমধ্যসাগরে প্রবেশের অন্যতম প্রধান বন্দর।  

এটি ‘থনিস’ নামেও পরিচিত ছিল। মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া থেকে ২০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে এই শহরের অবস্থান। সেই সময়ে অনেক জনপ্রিয় একটি বন্দর ছিল এটি।  

বন্দর ছাড়াও এটি মিশরীয় দেবতা ‘আমন’ এর সুবিশাল মন্দিরের জন্য বিখ্যাত ছিল। বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এখানে আসতো দেবতা আমনের পূজা করতে। 

খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীর কোনো এক সময় কোনো এক কারণে সমুদ্রে ডুবে যায় এই শহর, হারিয়ে যায় সমুদ্রের তলদেশে। ধারণা করা হয়, ভূমিকম্পের ফলেই এই শহরের পতন ঘটে। 

বহু বছর ধরে সমুদ্রের নিচে চাপা পড়া এই শহরের খোঁজ জানতো না কেউ। অনেকে মনে করতেন, হারিয়ে যাওয়া শহর আটলান্টিসের মতোই এটাও হয়তো কোনো এক রূপকথা, যার বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। 

বিখ্যাত গ্রীক ইতিহাসবিদ হোরাডোটাস, ডায়োডোরাস সহ আরো কয়েকজন ইতিহাসবিদ তাদের লেখায় এই শহরের কথা উল্লেখ করেছিলেন। পুরানো অনেক পুঁথিতেও ছিল এই শহরের বর্ণনা। 

এরপর ২০০০ সালে ফারাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ ফ্রাঙ্ক গুডি ও তার দল এই শহরের খোঁজ পান। সমুদ্রের তলদেশে প্রায় ১,২০০ বছরের জমে থাকা বালি ও তলানি সরিয়ে তিনি খুঁজে পান এই অমূল্য গুপ্তধন! 

উদ্ধারকাজের শুরুতে সমুদ্রের নিচের বালি ও পলিমাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা বিশাল বিশাল ভাস্কর্যগুলো পানির উপরে তুলে আনা হয়। এরপর জাহাজে করে এগুলো নিয়ে যাওয়া হয় সমুদ্রতীরে। 

সমুদ্রের নিচ থেকে তুলে আনা ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে ছিল ২,০০০ বছরের পুরানো মিশরীয় দেবী আইসিস এর আদলে তৈরি তৃতীয় ক্লিওপেট্রার মূর্তি। এছাড়াও ছিল মিশরীয় দেবতা হাপি ও এক ফারাও এর মূর্তি। 

আরো পাওয়া গিয়েছিলো গ্রীক ও মিশরীয় ভাষায় খোদাই করা পাথর ফলক ও প্রায় এক ডজনের মতো শবাধার। এসব শবাধারের মধ্যে ছিল দেবতা আমনের উদ্দেশ্যে বলি দেওয়া বিভিন্ন পশুর মমি